১৯ আগস্ট সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ২০ দলীয় জোটের সমাবেশ, উপস্থিত থাকবেন খালেদা জিয়া


স্টাফ রিপোর্টার
আগামী ১৯ আগস্ট রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রতিবাদ সমাবেশ করবে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট। গণবিরোধী জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালার প্রতিবাদে আয়োজিত এ সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। সমাবেশ ছাড়াও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সব দলের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের দাবিতে জনগণকে সম্পৃক্ত করতে সারা দেশে গণসংযোগ, গাজায় ইসরাইলের নগ্ন হামলার নিন্দা জানিয়ে কালো পতাকা মিছিলসহ মাসব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় এ জোট।
জোটের মহাসচিব পর্যায়ে বৈঠক শেষে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কর্মসূচির কথা জানান বিএনপি ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এর আগে দলের স্থায়ী কমিটির সঙ্গে বৈঠক এবং শরিক দলের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে আলোচনা করে এ কর্মসূচি চূড়ান্ত করেন দলটির চেয়ারপারসন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য রেদোয়ান উল্লাহ সাহিদী, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের মহাসচিব জুলফিকুর বুলবুল চৌধুরী, খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির সৈয়দ মুজিবর রহমান, জাগপা সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুত্ফর রহমান, বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভূইয়া, কল্যাণ পার্টির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব এস এম আমিনুর, এনপিপি মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান, এনডিপির মহাসচিব আলমগীর মজুমদার, লেবার পার্টির মহাসচিব হামদুল্লাহ আল মেহেদী, ন্যাপ ভাসানী মহাসচিব অ্যাডভোকেট আইয়ুব খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মির্জা আলমগীর জানান, বিএনপি জনগণের দুর্ভোগ লাঘবে এবং সবদলের অংশগ্রহণে অবাধ নির্বাচনের দাবিতে একই সঙ্গে আন্দোলন করবে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের দাবিতে জনসম্পৃক্ততার অংশ হিসেবে ২১ আগস্ট থেকে ৩১ আগস্ট সারা দেশের জেলা ও মহানগরে গণসংযোগ করবে ২০ দলের মহাসচিব পর্যায়ের নেতারা। এছাড়া ১৯ আগস্ট ‘গণবিরোধী’ সমপ্রচার নীতিমালার প্রতিবাদে সারা দেশের মহানগর ও জেলা সদরে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হবে। রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এ সমাবেশ হবে। ফিলিস্তিনে ইসরাইলের বর্বর হামলার প্রতিবাদে ১৬ আগস্ট ঢাকাসহ সারা দেশে কালো পতাকা মিছিল করবে জোটটি। নয়াপল্টন থেকে ওই দিন বিকাল ৩টায় এ কর্মসূচি শুরু হবে।
এদিকে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে তিন দিনব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছে দলটি। এর মধ্যে ১ সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিন সকাল ৬টায় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলীয় পতাকা উত্তোলেন করা হবে। সকাল ১০টায় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। ওইদিন বিকেল ৩টায় বিএনপির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এ পর্যন্ত নানাবিধ কর্মকাণ্ডের ওপর প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হবে। দেশব্যাপী সব ইউনিটে সকাল ৬টায় দলীয় পতাকা উত্তোলনসহ স্থানীয় সুবিধানুযায়ী দলের জেলা ও মহানগরে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করবে।
এ ছাড়া প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ৩১ আগস্ট বিএনপির উদ্যোগে আলোচনা সভা এবং ২ সেপ্টেম্বর বর্ণাঢ্য র্যালি অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে জোটের শরিক দলের মহাসচিবদের নিয়ে সভা করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সংবাদ সম্মেলনে মির্জা আলমগীর বলেন, সভায় পদ্মায় লঞ্চডুবিতে প্রাণহানির ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করা হয়। এ সময় সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সীমাহীন উদাসীনতা, অযোগ্যতা ও অক্ষমতার তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে।
অবিলম্বে ভাগ্যহত লঞ্চটিকে উদ্ধার এবং ডুবে যাওয়া যাত্রীদের মরদেহ স্বজনদের কাছে পৌঁছে দেয়ার দাবি জানিয়ে দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ এবং দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে উপযুক্ত শাস্তি প্রদানের দাবি জানানো হয়। তিনি বলেন, সরকার অবৈধ ক্ষমতাকে কুক্ষিগত রাখার হীন উদ্দেশ্যে মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম মূল চেতনা মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে হরণ করতে সমপ্রচার নীতিমালা করেছে। গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণমূলক এ নীতিমালা রাষ্ট্রীয় সংবিধান ও মত প্রকাশের মৌলিক অধিকার এবং বিশ্বব্যাপী মুক্ত সাংবাদিকতা বিরোধী।
এই নীতিমালার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, সভা মনে করে, এর মাধ্যমে সরকার গণতন্ত্র ও বাকস্বাধীনতা রুদ্ধ করে প্রকৃতপক্ষে একদলীয় স্বৈরশাসন বাস্তবায়নের পথে হাঁটছে। এর বিরুদ্ধে দেশবাসীকে গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, বৈঠকে ফিলিস্তিনে ইসরাইলের হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। গাজায় গণহত্যা ও আগ্রাসন বন্ধে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নিতে জাতিসংঘ, আরব লীগ ও ওআইসিসহ বিশ্বের সব গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। তিনি বলেন, সভায় তোবা গার্মেন্ট কারখানার আন্দোলনরত শ্রমিকদের ওপর পুলিশি হামলার নিন্দা করে অবিলম্বে তাদের পাওনা মেটানো ও কাজে যোগদানের ব্যবস্থা করার দাবি জানানো হয়। এ ছাড়া জোটের গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীদের অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানানো হয়।

One thought on “১৯ আগস্ট সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ২০ দলীয় জোটের সমাবেশ, উপস্থিত থাকবেন খালেদা জিয়া”

মন্তব্য করুন ( দয়া করে বাংলাতে মন্তব্য করুন )